ঢাকা বুধবার | ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শেষ পর্যন্ত ড্রয়েই শেষ হলো চট্টগ্রাম টেস্ট। রোববার ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনের শেষ সেশনের খেলা চলাকালে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান তোলার পর উভয় দল ড্র মেনে নিলে ম্যাচের সমাপ্তি ঘটে।
প্রথম ইনিংসে ২০০ রানে পিছিয়ে থেকে চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শেষ বিকেলেই ৮১ রান তুলতে গিয়ে তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায়। সেই অবস্থায় শ্রীলংকাকে চালকের আসনে রেখেই পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। তবে এদিন দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা।
আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক নতুন সঙ্গী লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে বিপদ সামাল দেন। আর এই বিপদ সামাল দেওয়ার পথেই তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক, যার মধ্য দিয়ে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েন তিনি।
চতুর্থ উইকেটে লিটন দাসের সঙ্গে ১৮০ রানের জুটিতেই মূলত বিপদমুক্ত হয় বাংলাদেশ। ২০০ রানের ঘাটতি পুষিয়ে বাংলাদেশ পায় লিড। ইনিংসের ৭৮তম ওভারে দলীয় ২৬১ রানে মুমিনুল হককে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে জুটি ভাঙেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। উইকেররক্ষক নিরোশান ডিকভেলার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তিনি খেলেন ১০৫ রানের দারুণ এক ইনিংস।
মুমিনুলের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন দাসও। বাজে শট খেলে মাত্র ৬ রানের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ইনিংসের ৮৩তম ওভারে দলীয় ২৭৯ রানে রঙ্গনা হেরাথের বলে দিলরুয়ান পেরেরার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৯৪ রান করেন তিনি।
মুমিনুল ও লিটনের বিদায়ের পর উইকেটে আসা মাহমুদুল্লাহ সঙ্গী মোসাদ্দেক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে বাকিটা সময় নির্বিঘ্নেই পার করেন। দিনের শেষ সেশনের খেলা চলাকালে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান তুলে যখন দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৭ রানের লিডে, তখনই ড্র মেনে নেন দুই অধিনায়ক।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গত বুধবার শুরু হওয়া টেস্টে টস জিতে প্রথম ইনিংসে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ১২৯ দশমকি ৫ ওভারে ৫১৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে মুমিনুল হক সর্বোচ্চ ১৭৬ রান করেন। এছাড়া মুশফিকুর রহিম ৯২, মাহমুদুল্লাহ ৮৩*, তামিম ইকবাল ৫২ ও ইমরুল কায়েস ৪০ রান করেন।
শ্রীলংকার পক্ষে তিনটি করে উইকেট নেন সুরঙ্গা লাকমল ও রঙ্গনা হেরাথ। দুটি উইকেট নেন লাকশান সান্দাকান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে তিন ব্যাটসম্যানের শতকে ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ৭১৩ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলংকা।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলংকার পক্ষে কুশল মেন্ডিস সর্বোচ্চ ১৯৬ রান করেন। এছাড়া ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ১৭৩, রোশেন সিলভা ১০৯ ও দিনেশ চান্ডিমাল ৮৭ রান করেন।
বাংলাদেশের পক্ষে তাইজুল ইসলাম ৪টি, মেহেদি হাসান মিরাজ ৩টি এবং মোস্তাফিজুর রহমান ও সানজামুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস: ১২৯.৫ ওভারে ৫১৩/১০ (ডিক্লে.), (মুমিনুল ১৭৬, মুশফিক ৯২, মাহমুদুল্লাহ ৮৩*, তামিম ৫২); লাকমল ৩/৬৮, হেরাথ ৩/১৫০, সান্দাকান ২/৯২
শ্রীলংকার প্রথম ইনিংস: ১৯৯.৩ ওভারে ৭১৩/৯ (ডিক্লে.), (মেন্ডিস ১৯৬, ধনঞ্জয়া ১৭৩, সিলভা ১০৯, চান্ডিমাল ৮৭); তাইজুল ১/২১৯, মেহেদি ১/১৭৪, মোস্তাফিজ ১/১১৩, সানজামুল ১/১৫৩
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস: ১০০ ওভারে ৩০৭/৫, (মুমিনুল ১০৫, লিটন ৯৪, তামিম ৪১, মাহমুদুল্লাহ ২৮*); হেরাথ ২/৮০, ধনঞ্জয়া ১/৪১, সান্দাকান ১/৬৪, পেরেরা ১/৭৪
ফল: ড্র
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুমিনুল হক
বিষয়সমূহঃ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম