ঢাকা শুক্রবার | ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন চায় চীন। এ সংকট সমাধানে চীন দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক কূটনীতি চালিয়ে যাচ্ছে।
রোববার বারিধারায় চীনা দূতাবাস কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত জ্যাং জু এ কথা জানান।
তিনি বলেন, চীনের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান, কিন্তু এ সংকটের কারণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট না হওয়া। চীন প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়েই আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করতে চায়।
বাংলাদেশ ও চীনের গণমাধ্যমের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মত বিনিময়ের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে দু’দেশের গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দীর্ঘ ঐহিত্য রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে রাষ্ট্র, সরকার এবং জনগণের ত্রিমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমানে চীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এ অবস্থায় দু’দেশের গণমাধ্যমের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের যে উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে তা দু’দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। দু’দেশের যৌথ সহযোগিতার সম্পর্ক নিবিড় করতে আরও কী ধরনের পদেক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে গণমাধ্যমের দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যবান পরামর্শ ও তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
চীনের রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতেই চীন দু’দেশের গণমাধ্যমের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এ কর্মসূচির লক্ষ্য দু’দেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধির মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ও মতবিনিময়, যৌথ কর্মশালা, সেমিনার এবং সফর বিনিময়।
তিনি বলেন, এর আগে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা চীন সফরে গিয়েছেন এবং ফিরে এসে দু’দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে অত্যন্ত ইতিবাচক প্রতিবেদন লিখেছেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা চীন সফর করবেন এবং তাদের লেখায় যৌথ সম্পর্ক উন্নয়নে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন অত্যন্ত আন্তরিক। এর আগে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ও মিয়মার সফর করে সংকট সমাধানে তিন স্তরের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেন। সে অনুযায়ীই চীন দ্বিপাক্ষিক ও বহুমাত্রিক কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, চীন চায় রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন, সেখানে তাদের সহিসংতামুক্ত বসবাস নিশ্চিত করা এবং সার্বিকভাবে পিছিয়ে থাকা রাখাইনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীও মিয়ানমার সফর করেছেন। তার সঙ্গেও রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের উপায় নিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা পরিচালনার কথা চীন স্বীকার করে কি-না এবং সেখানে গণনিষ্ঠুরতার বিচার চীন চায় কি-না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত সরাসারি কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, চীনের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান, কিন্তু এ সংকটের কারনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট না হওয়া। চীন প্রত্যাশা করে রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মত বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী সম্পর্কের কোনো ভুল ব্যাখা করা হবে না। চীন বিশ্বাস করে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সু-সম্পর্ক রেখেই যে কোনো সংকটের সমাধান সম্ভব, রোহিঙ্গা সংকটেরও দ্রুত সমাধান হবে।
মতবিনিময়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বার্তা বিভাগের নেতৃত্বস্থানীয়রা এবং কূটনৈতিক প্রতিবেদকরা অংশ নেন।
বিষয়সমূহঃ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম