ঢাকা রবিবার | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সেমিনারে বক্তারা
বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী শতকে বাংলাদেশের ৪২ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।
বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী শতকে বাংলাদেশের ৪২ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যাবে। এতে বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরগুনা ও পটুয়াখালীর মতো উপকূলীয় এলাকার পাশাপাশি যশোর, সিলেটের মতো অন্যান্য এলাকাও সাগরের লবণাক্ত পানিতে নিমজ্জিত হবে। পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ বেড়ে যাওয়ায় যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে, তাতে স্থলভাগে সাগরগর্ভে বিলীন হবে। এ ছাড়া অতিবৃষ্টি, খরা, নদীভাঙন, বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে।
আজ দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাব ও প্রস্তুতি’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক এস আই খান এসব হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। আইইবির ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এস আই খান।
এস আই খান বলেন, বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। এতে ২০৫০ সালের মধ্যে সাগর ভাগের উচ্চতা ২৩ সেন্টিমিটার বাড়বে। এ কারণে দেশের ১৮ শতাংশ ভূমি তলিয়ে যাবে। আর ২১০০ সাল নাগাদ ৬৯ সেন্টিমিটার উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের ৪২ শতাংশ ভূমিতে সাগরের পানি প্রবেশ করবে। এতে কোটি কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হবে। এ প্রক্রিয়া থামাতে সাগরে ক্রসড্যাম দিয়ে এখনই নতুন ভূমি জাগাতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখনই পড়তে শুরু করেছে বলে মনে করেন এস আই খান। তিনি বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সারা বিশ্বে বজ্রপাতের হার বেড়ে গেছে। ২০১০ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত বাংলাদেশে সাত বছরে ২ হাজার ২৯ জন মানুষ বজ্রপাতে মারা গেছে। এদের অধিকাংশই কৃষক। ভবিষ্যতে বজ্রপাত আরও বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে। এতে বজ্রপাতের হার আরও বাড়বে বলে মনে করেন এই পরিবেশবিজ্ঞানী।
এস আই খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, জাপানসহ যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী, তাদের বড় অংশ এ পরিবর্তনের কুফল কমই ভোগ করছে। কিন্তু বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য তেমন একটা দায়ী না হলেও সবচেয়ে বেশি যারা এর ক্ষতির শিকার হবেন, সে তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে বাংলাদেশ।
এস আই খান বলেন, অসময় বেশি বৃষ্টি হওয়ার কারণে ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে ধান চাষের সময় এগিয়ে আনতে হবে বলেও এই বিজ্ঞানী মনে করেন। এ ছাড়া দেশের বনজ সম্পদ রক্ষা, বেশি করে গাছ লাগানো ও প্রকৃতির দূষণ কমানোর ওপরও জোর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আইইবির সভাপতি মো. আবদুস সবুর, সহসভাপতি মো. নুরুজ্জামান, মো. কবির আহমেদ প্রমুখ।
বিষয়সমূহঃ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম