ঢাকা রবিবার | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ডাকা সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে আগামী রোববার ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
আজ শুক্রবার দুপুরে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলের পক্ষে ঘোষিত কর্মসূচি বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে পালনের জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
আগামী নির্বাচন নিয়ে রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু আমি তাঁর উদ্দেশে বলতে চাই, বর্তমানে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। আর বিএনপির চেয়ারপারসনকে ছাড়া বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে না। প্রধানমন্ত্রী মনে হয় অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে খুলনা-গাজীপুর মার্কা নির্বাচনকে বুঝিয়েছেন। যে নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল করে জাল ভোটের মহোৎসব চলে, কেন্দ্রে শুধু আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডাররা থাকে, অন্য কোনো দলের এজেন্টকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করে বা তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
রিজভী আরো বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে পরিষ্কার বলে দিতে চাই, আপনি কোন আধ্যাত্মিক ক্ষমতার জোরে জানতে পারলেন যে আপনার অধীনেই বিএনপি নির্বাচনে আসবে? আপনি তো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে লোহার সিন্দুকে আটকিয়ে রেখেছেন। আর অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনকে তো আপনি পুলিশের রাইফেলের নলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং আপনার অধীনে জাতীয় নির্বাচন আর নেকড়ের অধীনে নিরীহ প্রাণীর নিরাপত্তা সমান কথা।’
গতকাল বৃহস্পতিবার দৈনিক পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিনের ‘তারেকের টেবিলে বিএনপির ৩০০ আসনের প্রার্থী তালিকা’ শীর্ষক সংবাদের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেদনটি শুধু হাস্যকরই নয়, সরকারের মিথ্যা প্রপাগান্ডার এক উদ্বেগজনক সংযোজন। আমরা নিশ্চিত যে বিশেষ সংস্থার নির্দেশেই প্রতিবেদনটি তৈরি ও প্রকাশ করা হয়েছে। সারা দেশের মানুষ যখন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সোচ্চার, তখন জনদৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরানোর জন্য আওয়ামী সরকারের নির্দেশে দুরভিসন্ধিমূলকভাবে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে।’
বিএনপি নেতা আরো বলেন, ‘সরকার সব দিক থেকে যে মুহূর্তে ব্যর্থতার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে এই বানোয়াট সংবাদটি প্রচার করা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে অভাবনীয় লুটপাট ও বিদেশি ব্যাংকে ক্ষমতাসীনদের বিপুলপরিমাণ গচ্ছিত অর্থের খবর জাতির সামনে উন্মোচিত হওয়া, কোটাবিরোধী দেশের অধিকাংশ শিক্ষিত তরুণদের গণতান্ত্রিক দাবির আন্দোলনে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত গুণ্ডামি হিটলারের গেস্টামো বাহিনীকেও লজ্জায় ফেলত। দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের ক্ষোভের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা ও ভোট সন্ত্রাসের চিত্র নিয়ে যখন দেশ-বিদেশ থেকে নিন্দা জানানো হচ্ছে, তখন একটি সরকারঘনিষ্ঠ পত্রিকার মাধ্যমে নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ও মনোনীত প্রার্থীদের একটি মিথ্যা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের মনকে নড়বড়ে করার জন্যই সরকার-সমর্থিত ওই পত্রিকার দ্বারা হাস্যকর ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদটি পরিবেশন করিয়েছে সরকার।’
রিজভী প্রশ্ন রাখেন, ‘পত্রিকাটি কোন টেলিস্কোপের মাধ্যমে সুদূর লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের টেবিলে ৩০০ আসনের প্রার্থী তালিকার সন্ধান পেয়েছে? নতুন আবিষ্কৃত দূরবীক্ষণ যন্ত্রটির নাম জনসমক্ষে জানালে প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী হাভেলের নামের সঙ্গে পত্রিকাটির প্রতিবেদকদের নামও মহাবিজ্ঞানী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে এবং বহু আন্তর্জাতিক খ্যাতিও মিলবে। উক্ত প্রতিবেদনের সংশ্লিষ্টরা শুধু জ্যোতির্বিজ্ঞানীই নন, সিদ্ধ পুরুষও বটে। কারণ তারা মন্ত্রবলে মৃত মানুষকেও জীবিত করতে পারেন। উক্ত প্রতিবেদনে কয়েক বছর আগে বিএনপির মৃত কয়েকজন সাবেক সাংসদদের নামও আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য মনোনীত প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সদ্য প্রয়াত জয়পুরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোজাহার আলী প্রধান, কুমিল্লা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মরহুম খোরশেদ আলম, চাঁদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর হায়দার খান, রাজশাহী-৬ আসনে মরহুম আজিজুর রহমান।
বিষয়সমূহঃ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম