ঢাকা সোমবার | ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিশ্বজুড়ে আলোচিত পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসে নাম আসায় এক বিদেশীসহ সাত ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এর আগেও এ বিষয়ে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে অন্তত ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে দুদক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে আলাদা আলাদা চিঠিতে তাদের আগামী ১৬ ও ১৭ জুলাই হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পানামা পেপারসে নাম আসায় যে চার ব্যবসায়ীকে ১৬ জুলাই দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে তাঁরা হলেন- ইউনাইটেড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মাল্টি ট্রেড মার্কেটিং লিমিটেডের পরিচালক হাসান মাহমুদ রাজা, খন্দকার মঈনুল আহসান, আহমেদ ইসমাইল হোসেন এবং আকতার মাহমুদ।
প্যারাডাইস পেপারসে নাম আসা যে তিনজনকে ১৭ জুলাই হাজির হতে বলা হয়েছে তারা হলেন- উইং লিমিটেডের পরিচালক এরিক জনসন আনড্রেস উইলসন, ইন্ট্রিডিপ গ্রুপের ফারহান ইয়াকুবুর রহমান এবং ফেলকন শিপিংয়ের মাহতাবা রহমান।
মোসাক ফনসেকা নামে পানামার একটি আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি ফাঁস হয় ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল। এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলে। নথিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নিকটাত্মীয়দের নাম আসে। এ তালিকায় আরও আছে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ বিন আবদুল রহমান আল সৌদ, মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের এক ছেলে এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দুই ছেলে ও এক মেয়ের নাম।
রাজনৈতিক ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের পাশাপাশি ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি, ভারতের চলচ্চিত্রজগতের খ্যাতিমান অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন ও তাঁর পুত্রবধূ অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাইয়ের নামও পাওয়া গেছে ওই নথিতে।
মোসাক ফনসেকার ওই ১ কোটি ১৫ লাখ নথি অজানা সূত্র থেকে জার্মান দৈনিক জিটডয়েচ সাইতং-এর হাতে আসে। পত্রিকাটি সেসব নথি ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসকে (আইসিআইজে) দেয়। ১৯৭৭ থেকে ২০১৫, প্রায় ৪০ বছরের এসব নথি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার কিছু অংশ আইসিআইজে প্রকাশ করে।
সূত্র জানায়, কর ফাঁকি ও অর্থপাচার সংক্রান্ত সাড়া জাগানো পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে এ পর্যন্ত রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীসহ ৩৪ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানের নামও উঠে এসেছে ফাঁস হওয়া তথ্যে।
পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে কোনো কোনো গণমাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম আসার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল দুদকের উপপরিচালক আখতার হামিদ ভুঁইয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করে দুদক। দলের অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক মজিবুর রহমান ও উপসহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাত।
অন্যদিকে, ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্যারাডাইস পেপারসের প্রায় ২৫ হাজার নথি প্রকাশ করা হয়। সেখানে ফাঁস হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর অনেক ব্যক্তির গোপন তথ্য। ১২০ জন রাজনৈতিক নেতা এ তালিকায় রয়েছেন। এবার ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মতো ব্যক্তির নাম রয়েছে। সেখানে যেখানে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে।
বিষয়সমূহঃ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম