ঢাকা সোমবার | ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলাদেশের প্রথম গ্রুপ হিসেবে বিদেশে কোনো কোম্পানি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল আকিজ গ্রুপ। তাদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আকিজ জুট মিলসের মালিকানাধীন মালয় ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি আকিজ রিসোর্সেস এসডিএন বিএইচডি ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারে মালয়েশিয়ার রবিন রিসোর্সেস এসডিএন বিএইচডি ও এর সাবসিডিয়ারি রবিনা ফ্লোরিং এসডিএনবিএইচডি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন আকিজ গ্রুপের কর্মকর্তারা।
আকিজ গ্রুপের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, মালয়েশিয়ার মেনতাকাবে অবস্থিত রবিন গ্রুপের কোম্পানি দুটি কাঠের বোর্ড, উডেন ফ্লোর টাইলস ও কাঠজাতীয় বিভিন্ন পণ্য প্রস্তুত করে। বিশ্বের ৬০টি দেশে তাদের পণ্য রফতানি হয়। সাবসিডিয়ারি ও মূল কোম্পানিটির সম্মিলিত বার্ষিক বিক্রি ৬ কোটি ডলার। সেখানকার ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের অবস্থান ৩ নম্বরে। প্রায় ৭ মূল্য আয় (পিই) অনুপাতে আমরা কোম্পানি দুটি অধিগ্রহণ করেছি। রফতানি থেকে বছরে ২০ কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী আকিজ গ্রুপকে মালয়েশিয়ায় ২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় অবশিষ্ট অর্থ জার্মান ঋণদাতা ডিইজি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আকিজ গ্রুপের পরিচালক সেখ জামিল উদ্দিন ও সেখ শামিম উদ্দিন জানান, আকিজ গ্রুপ বাংলাদেশেও উডেন বোর্ড তৈরি করে। মালয় কোম্পানিটির অত্যাধুনিক কারখানা, প্রযুক্তি আর গড়ে তোলা বাজার নেটওয়ার্ক এ ব্যবসায় আকিজ গ্রুপকে অনেক এগিয়ে দেবে। কোম্পানিটি অধিগ্রহণের পরই এর সক্ষমতা দ্বিগুণে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে আকিজ গ্রুপ। বর্তমানে সেখানে ৪৭৫ জন দক্ষ কর্মী রয়েছেন, যাদের প্রায় সবাই স্থানীয়। তাদের ধরে রেখেই কোম্পানিটিকে এগিয়ে নেয়া হবে। সক্ষমতা সম্প্রসারণের পর সেখানে বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক মানবসম্পদ নিয়োগের চেষ্টা করবে আকিজ গ্রুপ।
অনুষ্ঠানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের ইজাজ বিজয় বলেন, এ অধিগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের কাছে একটি বার্তা গেছে যে, বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা বিশ্বের অন্যান্য দেশে কোম্পানি অধিগ্রহণ করেও ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারে। এটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে একটি মাইলফলক। ঋণদাতা, মনোনীত ব্যাংক ও সিকিউরিটি এজেন্ট হিসেবে এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে পেরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড গর্বিত।
আরেক ঋণদাতা ডিইজি-কেএফডব্লিউর জ্যেষ্ঠ বিনিয়োগ ব্যবস্থাপক আরিফ ইকবাল খান বলেন, মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে ব্যবহারিক জ্ঞান আমদানিতে এ ধরনের অধিগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার ছিল স্থানীয় মার্চেন্ট ব্যাংক গ্রিন ডেল্টা ক্যাপিটাল লিমিটেড। মালয় কোম্পানি দুটির ভ্যালুয়েশন থেকে শুরু করে আকিজ গ্রুপের জন্য ঋণদাতা বাছাই করা, লেনদেনের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দায়িত্ব ছিল তাদের ওপর। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রথমবারের মতো সম্পন্ন হওয়া অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ক্রেতাপক্ষের পরামর্শক ও ম্যান্ডেটেড লিড অ্যারেঞ্জার হতে পেরে আমরাও গর্বিত।
প্রসঙ্গত, ১৯৪২ সালে যাত্রা করা আকিজ গ্রুপ বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় কনগ্লোমারেট। দেশে তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বিষয়সমূহঃ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম