ঢাকা বৃহস্পতিবার | ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী নিউজ
২৮ নভেম্বর, ২০১৭ | ০৮:৪২

৯২ এর চুক্তিতে আধুনিকায়ন জরুরি

tesst

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। তাদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে সোচ্চার বহু দেশ। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে বারবার চাপ প্রয়োগ করছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বিবৃতিও দিয়েছে। ক্রমাগত আন্তর্জাতিক চাপের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। এতে রোহিঙ্গাদের দু’মাসের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলা হয়। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এর আগে ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু সেই চুক্তির সব শর্ত মিয়ানমার রক্ষা করেনি। তাই মিয়ানমারের এবারের চুক্তিকে কৌশল হিসেবেই দেখছেন অনেক বিশ্লেষক। মিয়ানমার ও বাংলাদেশের এই সমঝোতা কতটা বাস্তবসম্মত তা নিয়ে সমকাল অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির-

১৯৯২ সালের প্রেক্ষাপট আর এখনকার প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা। সারা বিশ্ব কিন্তু এখন দেখছে মিয়ানমারে কি ঘটছে। যে বাস্তবতায় ১৯৯২ সালে সমঝোতা হয়েছিল, সেটা ২০১৭ সালে এসে কতটা প্রাসঙ্গিক তা বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়েছে। অং সান সু চি নিজে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অর্ধেক বাংলাদেশে চলে এসেছে। বিষয়টা এমন নয় যে, মানুষ এক দেশ থেকে শুধু অন্যদেশে এসেছে। তাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী, মিলিশিয়া ও সরকার সমর্থকরা অত্যাচার চালিয়েছে। তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে-এসবের প্রমাণ আছে। সব ছাপিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখন আন্তর্জাতিকভাবে মানবতার প্রশ্ন উঠেছে। কাজেই বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৯৯২ সালের সমঝোতা কাঠামো কতটা উপযোগী সেটা ভেবে দেখতে হবে। যখন একটা সমঝোতা হয় তখন দুই দেশের মধ্যে আগে কি কি হয়েছে তা উদাহরণ হিসাবে দেখা হয়। কিন্তু সেটাই যদি পুরোপুরি অনুসরণ করা হয় তাতে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বা সমঝোতা বাস্তবসম্মসত হবে না। কারণ যে প্রেক্ষাপটে ১৯৯২ সালের চুক্তির শর্ত ও রোহিঙ্গা যাচাই প্রক্রিয়া ঠিক করা হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতি তা থেকে অনেকটাই আলাদা। একারণে সমঝোতা স্মারকের ক্ষেত্রে এর গুণগত কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। বতর্মান বাস্তবতা মেনে, ১৯৯২ সালে চুক্তির যেসব শর্ত ছিল সেগুলো এখন উপযোগী কিনা সেটা দেখতে হবে নতুন করে। সর্বোপরি, ১৯৯২ সালের চুক্তির শর্ত আধুনিকায়ন করতে হবে রোহিঙ্গাদের স্বার্থেই।

বিষয়সমূহঃTags: