ঢাকা বৃহস্পতিবার | ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
উদ্বোধন ও মেলা পরিদর্শন শেষে বিকেল সোয়া ৫টার দিকে প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরপরই প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে হাজারো প্রাণের কলরোলে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টনী খুলে নেওয়ার পর মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। তবে মাত্র এটুকু সময়েই বয়ে যায় জনস্রোত। প্রতিবারের মতো এবারও সবার স্টল সজ্জার কাজ শেষ হয়নি। প্রথম দিন বলেই হয়তো প্রায় সবারই লক্ষ্য ছিল কেনার চেয়ে বই দেখার দিকে। বিক্রেতারাও বই দেখিয়েছেন আগ্রহ নিয়ে। অনেকে সংগ্রহ করেছেন বিভিন্ন প্রকাশনার নতুন বইয়ের ক্যাটালগ। বইও কিনতে দেখা গেছে অনেককে। আজ শুক্রবার মেলার গেট খুলবে বেলা ১১টায়; নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। গ্রন্থমেলার আজ প্রথম শুক্রবারেই শিশুপ্রহর ঘোষণা করেছে বাংলা একাডেমি। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে এই শিশুপ্রহর।
মেলার প্রথম দিনেই পাঠক ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে অনিন্দ্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী আফজাল হোসেন বলেন, উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর খুব কম সময় হাতে থাকলেও মেলায় মানুষ আসছে- এটাই প্রথম দিনের সফলতা। আজ দ্বিতীয় দিন শুক্রবার হওয়ায় প্রথম থেকেই কেনাবেচা জমে উঠবে বলে মনে করেন তিনি। মেলার বিন্যাস নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
গতকাল মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, এখনও প্রায় ৫০টি স্টল পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- র্যামন পাবলিশার্স, প্রকৃতি, গোল্ডেন বুকস্, বনলতা, অনার্য, মনন প্রকাশ, বাঁধন পাবলিশার্স, প্রতিভা প্রকাশ, উলুখড়, মধ্যমা, রাতুল গ্রন্থপ্রকাশ, টুম্পা প্রকাশনী, সিঁড়ি প্রকাশন, রেয়ার বুকস, জ্যোতিপ্রকাশ, একুশে বাংলা প্রকাশন, ম্যাগনাম ওপাস, নক্ষত্র, জ্ঞানবিতান, বইবাজার, বাংলালিপি, সবুজপাতা, মেঘ, তিউরি প্রকাশন, বেহুলা বাংলা, বর্ণবিচিত্রা, আলীগড় লাইব্রেরি, আলোর ভুবন, কামরুল বুক হাউজ, তরফদার প্রকাশনী। অনেক স্টলে দেখা গেছে এখনও রঙের কাজ করতে। প্রাঙ্গণ ও উদ্যানে ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে স্টল সজ্জার সরঞ্জাম। মেলার দর্শনার্থীদের জন্যও চালু হয়নি টয়লেট। বহেড়াতলায় লিটলম্যাগ চত্বরেও খোলেনি কোনো স্টলের ঝাঁপি।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ বললেন, নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে মেলার স্টল সজ্জা করার কথা। তবে শুক্রবারের মধ্যে কোনো স্টল চালু করা না হলে নীতিমালা অনুযায়ী স্টল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, লিটলম্যাগ চত্বর প্রথমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিল। কিন্তু পরে লিটলম্যাগের স্বত্বাধিকারীদের দাবির মুখে সেটি বহেড়াতলায় স্থানান্তর করা হয়। তাই এ চত্বরের কাজ এখনও একটু বাকি। শুক্রবারের মধ্যেই মেলার সজ্জা পূর্ণাঙ্গতা পাবে বলে জানান তিনি।
নতুন বই :মেলার প্রথম দিনে তথ্যকেন্দ্র চালু ছিল না। তাই নতুন বইয়ের সংখ্যা সম্পর্কেও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রকাশক ও বিক্রেতাদের বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে, প্রথম দিনেই তিন শতাধিক নতুন গ্রন্থ প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- যতীন সরকারের ‘মুক্তিযুদ্ধের চড়াই উৎরাই’, ইমতিয়ার শামীমের গল্পগ্রন্থ ‘কাল অকাল’ (কথাপ্রকাশ), হাসান আজিজুল হকের ‘আমার ইলিয়াস’ (ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ), নুরুল আনোয়ারের ‘মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যাকাণ্ড :দুর্যোধনটি কে?’ (ঐতিহ্য), বুলবুল সারওয়ারের ‘মহাভারতের পথে :এক’, মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘সাইক্লোন’, গুলতেকিন খানের ‘চৌকাঠ’, আহসান হাবীবের ‘সত্যি অ্যাডভেঞ্চার’ (তাম্রলিপি), হুমায়ূন আহমেদের ‘সেরা সাত মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস’ (অবসর), সুমন্ত আসলামের ‘তুমি আছো তাই’ (কাকলী প্রকাশনী), আহমদ রফিকের ‘কবিতার বিভিন্ন ভাষা’, দ্বিজেন শর্মার ‘নিসর্গকথা’ (অনিন্দ্য), সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ‘পিতার হুকুম’, মোহাম্মদ গোলাম রব্বানীর ‘বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল :অবরুদ্ধ ৬৮ বছর’ (প্রথমা), হাসনাত আবদুল হাইয়ের ‘সময় অসময়’ (আগামী), ইমদাদুল হক মিলনের ‘একটি রহস্য উপন্যাস’ (অনন্যা) ইত্যাদি।
আজকের অনুষ্ঠান :আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘শহীদ নূতনচন্দ্র সিংহ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সজীব কুমার ঘোষ। আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেবেন মহীবুল আজিজ, প্রফুল্লচন্দ্র সিংহ এবং রাশেদ রউফ। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠান।
সূত্র: দীপন নন্দী, সমকাল
বিষয়সমূহঃ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম