ঢাকা বৃহস্পতিবার | ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কোটা সংস্কার
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের পক্ষ থেকে করা মামলাগুলো আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ করা না হলে আন্দোলনে নামবেন তারা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাবি’র কেন্দ্রীয় লাইব্রেবির সামনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ দাবি জানান।
গত সপ্তাহে ওই আন্দোলন চলাকালে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের বাসায় হামলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে চারটি মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের যুগ্ন আহ্বায়ক নূর হোসেন বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভিত্তিহীনভাবে যে অজ্ঞাতনামা মামলা দিয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তা এখনো প্রত্যাহার করেনি। আগামী ২ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে অজ্ঞাতনামা মামলা দিয়েছে তা প্রত্যাহার না করলে ছাত্রসমাজ আবার আন্দোলনে নামবে।
আমরা আন্দোলন শুরু করার পর থেকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের সব কিছু তদন্ত করে দেখেছে। আমাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা। কিন্তু তারা নেগেটিভ কিছু না পাওয়ায় আমাদের হয়রানি করেনি। যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে, তখন একটা কুচক্রী মহল বিএনপি-জামায়াত বলে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের চেষ্টা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের নেতৃত্ব নিয়ে বিতর্কিত করা মানে সরকারকে বিতর্কিত করা, দেশকে অস্থিতিশীল করা।’
নূর হোসেন আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসায় হামলা হয়েছে সেখানে কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী জড়িত নয়। কিন্তু একটি জাতিয় দৈনিক রিপোর্ট করেছে কেন্দ্রীয় কমিটির একজনের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভিসি বাড়ি হামলার সাথে জড়িতদের তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক। আমরা সকল ধরনের সহযোগিতা করব। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে কেউ মিথ্যা ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয় তাহলে বাংলার ছাত্রসমাজ মানবে না।’
পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘আমি বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজি মুহাম্মদ মহসীন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। আমার পরিবার আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের ভিন্ন পরিচয় দিয়ে আন্দোলন ভিন্নপথে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যারা এসব করছেন, তাদের বলি, আমরা যদি আন্দোলন গড়ে তুলি, পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।
পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ইত্তেফাকে আমাকে জামাত-শিবির পরিচয় দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পুরো প্রতিবেদন মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভরা। এমনকি আমার বাবার নামও ভুল লেখা হয়েছে।
সংগঠনের নেতারা বলেন, আজকে বাংলাদেশের একটা জাতীয় দৈনিক রিপোর্ট করেছে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি নাকি বিএনপি এবং জামায়াতের সাথে জড়িত। অথচ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের ডিটেইলস গোয়েন্দা সংস্থারা নিয়ে গিয়েছে। তারা তখন কিছু পায়নি। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের নেগেটিভলি উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সারা বাংলার ছাত্রসমাজকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করবেন না। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার বার্তা সম্পাদক, যে রিপোর্টার এ বানোয়াট রিপোর্ট করেছে, তারা আজকে বিকেল ৫ টার মধ্যে এই সংবাদ প্রত্যাহার না করে এবং ক্ষমা না চায় তাহলে আগামীকাল থেকে ইত্তেফাক পত্রিকাকে বর্জন করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল্লাহ নূর, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।
বিষয়সমূহঃTags: কোটা সংস্কার, মামলা, মামলা প্রত্যাহার
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম