ঢাকা শনিবার | ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী নিউজ ডেস্ক
২৫ জুলাই, ২০১৮ | ২৩:০০

চালক-হেলপারই নদীতে ফেলে দেয় পায়েলকে

tesst

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়ার ভাটেরচর ব্রিজ এলাকায় শনিবার (২১ জুলাই) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে যানজটের কবলে পড়ে হানিফ পরিবহনের ভলভো বাসটি। যানজটে গাড়ি থমকে আছে দেখে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান পায়েল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাস থেকে নামার আগমুহূর্তে গাড়ি ছেড়ে দেন চালক।

এতে বাসের ধাক্কায় মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়ে মহাসড়কে পড়েই জ্ঞান হারান পায়েল। এ সময় সুপারভাইজার মো. জনি তাকে ওঠাতে বললেও যাত্রী পায়েল মারা গেছেন বলে মনে করে চালক জালাল ও হেলপার ফয়সাল। এতে দায় এড়াতে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে ঘটনাস্থল ভাটেরচর ব্রিজের নিচে ফুলদী নদীতে তাকে ফেলে দেওয়া হয়।

বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-৩ এর বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিমউদ্দিনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বাসের সুপারভাইজার মো. জনি এ তথ্য দেন।

জনির স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে তিনদিনের মাথায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েলের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হলো।

গজারিয়া থানার ওসি হারুন অর রশীদ জানান, মঙ্গলবার রাতে হানিফ পরিবহনের গাড়ির চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারকে গজারিয়া থানায় আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সুপারভাইজার জনি ১৬১ ধারায় পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়ে পড়ে গেলে তিনি (সুপারভাইজার) ছেলেটিকে বাসে ওঠাতে বলেছিলেন চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। কিন্তু ছেলেটি মারা গেছে মনে করে বাসে ঘুমিয়ে থাকা অন্য যাত্রীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভাটেরচর ব্রিজের নিচে তাকে পানিতে ফেলে দেয় চালক জালাল ও হেলপার ফয়সাল।

মুন্সীগঞ্জ কোর্ট পরিদর্শক হেদায়েতুল ইসলাম ভুইয়া জানান, গ্রেফতার তিন আসামির মধ্যে বাসের সুপারভাইজার জনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তিনজনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে বন্ধু আদর ও শান্তর সঙ্গে ঢাকা আসছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েল। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়ার ভাটের চর এলাকায় যানজটে আটকা পড়ে বাসটি। এ সময় পায়েল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাস থেকে নেমে নিখোঁজ হন। তখন তার দুই সহযাত্রী বন্ধু বাসে ঘুমিয়ে ছিলেন। এর একদিন পর ফুলদী নদী থেকে পায়েলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

বিষয়সমূহঃ