ঢাকা রবিবার | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা হলে তা নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকবে আওয়ামী লীগ। এ জন্য দলের নেতাকর্মীদের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজপথে থাকার নির্দেশনাও দেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে খুব সতর্কভাবেই এগোতে চাইছে সরকার।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধারণা, আদালতের রায় সামনে রেখে এক ধরনের অস্থির পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা করছে বিএনপি। সেইসঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীরা কথিত আন্দোলনের নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের মাধ্যমে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিরও ষড়যন্ত্র করছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন তারা।
তবে দলের নীতিনির্ধারক নেতারা আদালতের রায় ঘোষণার আগপর্যন্ত কোনো ধরনের সাংগঠনিক নির্দেশনা দিতে চাইছেন না। তাদের মতে, আদালতের রায় কী হবে- তা বলা মুশকিল। তাই আদালতের রায় ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সেইসঙ্গে রায় ঘোষণার পর বিএনপির ভূমিকা কী হবে, তাও লক্ষ্য রাখতে হবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় হচ্ছে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে অনেকের মতো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিচারাধীন এ মামলা দুটির গতি-প্রকৃতি দেখে মনে করছেন, আদালতের রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে নানামুখী আলাপ-আলোচনা করছেন। সেইসঙ্গে আদালতের রায় ঘোষণার পর দেশজুড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের নাশকতার আশঙ্কার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রয়েছে। তাদের অনেকেই এ ব্যাপারে দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দলীয় নির্দেশনা জানতে চাইছেন। শীর্ষ নেতারা এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি সমকালকে বলেন, আদালতের রায় নিয়ে আগাম মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই। তবে কেউ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করলে সেটা নিয়ন্ত্রণ করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেইসঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলায় দলীয়ভাবেও প্রস্তুতি থাকবে।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, তথাকথিত আন্দোলনের নামে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করলে তা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা হবে। নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকবেন। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় অতীতের মতো আগামীতেও সক্রিয় থাকবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন নেতা বলেছেন, সরকার পরিস্থিতি শক্তভাবে সামাল দেওয়ার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আদালতের রায় ঘোষণার পরপরই সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে। এর আগপর্যন্ত নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবেন। প্রস্তুত থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী এমপি বলেন, বিএনপি তথাকথিত আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের অপচেষ্টা করলে রাজপথেই তাদের মোকাবেলা করা হবে। তাদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। তবে নোয়াখালীতে অস্থিরতা সৃষ্টির কোনো আশঙ্কাই নেই। কেননা, নোয়াখালীতে আন্দোলন করার মতো ক্ষমতা নেই বিএনপির।
এদিকে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ১৫টি টিমে বিভক্ত হয়ে আজ শুক্রবার থেকে দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফরে যাচ্ছেন। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা প্রতিটি টিমের নেতৃত্বে থাকবেন। এ সফরসূচির সাংগঠনিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত করছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সফরকালে কেন্দ্রীয় নেতারা সভা-সমাবেশের মাধ্যমে জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বেলায় সরকারকে সহায়তা দেওয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জনগণের প্রতি আহ্বান জানাবেন।
বিষয়সমূহঃTags: আওয়ামী লীগ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ
শিরোনাম